দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থিক সেবাকে সহজ করতে দেশব্যাপী চালু হচ্ছে ‘ভিলেজ ডিজিটাল বুথ’। নতুন এ সেবা দেশের প্রান্তিক অঞ্চলে পৌঁছে দিতে এটুআই-এর ‘পেমেন্ট এগ্রিগেটর প্ল্যাটফর্ম ‘একপে’ এবং ‘জয়তুন বিজনেস সলিউশনস’ একসঙ্গে কাজ করবে।‘

মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) রাজধানীর এক হোটেলে এটুআই এবং জয়তুন বিজনেস সলিউশনসের মধ্যে এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।

এ সময় এটুআই- এর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর এবং জয়তুন বিজনেস সলিউশনসের চেয়ারম্যান মো. আরফান আলী নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে সই করেন।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, দেশব্যাপী ভিলেজ ডিজিটাল বুথ থেকে প্রান্তিক এলাকায় বসবাসকারী সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে প্রযুক্তিনির্ভর আর্থিক সেবা দেয়া হবে। এক্ষেত্রে এটুআই এর পেমেন্ট এগ্রিগেটর প্ল্যাটফর্ম ‘একপে’ এ কার্যক্রমে কারিগরি এবং সার্বিক সহযোগিতা দেবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কার্যক্রমকে আরও দ্রুত এবং প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এগিয়ে নিতে প্রতিটি গ্রামে একটি ভিলেজ ডিজিটাল বুথ প্রতিষ্ঠা করা হবে।

ভিলেজ ডিজিটাল বুথ পরিচালনার বিষয়ে বলা হয়, জয়তুন বিজনেস সলিউশনসের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় একজন স্থানীয় উদ্যোক্তার মাধ্যমে এই ভিলেজ ডিজিটাল বুথ পরিচালিত হবে। মূলত এটি একটি গ্রামীণ আর্থিক সেবা কেন্দ্র হয়ে গড়ে উঠবে, এই বুথ থেকে ডিজিটাল আর্থিক সেবাসহ বিভিন্ন প্রকার ই-সেবা নিশ্চিত করা হবে। সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সেবা, সরকারি পরিষেবা বিল পরিশোধ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বিশেষভাবে ভাতাসমূহ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত বিল পরিশোধ, টেলিমেডিসিন, ই-টিকেটিং ইত্যাদি সেবা দেয়া হবে।

এছাড়া প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এ ভিলেজ ডিজিটাল বুথ থেকে অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম বা আর্থিক সেবা গ্রহণ করতে পারবেন বলেও জানানো হয়। এটি কেবল সুনির্দিষ্ট বাণিজ্যিক ব্যাংকের নির্ধারিত আর্থিক সেবাই দেবে না বরং অন্য সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের সেবা এক জায়গা থেকে পাওয়া যাবে। এতে গ্রামীণ অঞ্চলে সুবিধাবঞ্চিত ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আর্থিকসেবা বহির্ভুত জনগোষ্ঠী তাদের আর্থিক সেবা গ্রহণে অনেক বেশি সময় পাবে। পাশাপশি তাদের কষ্ট ও অর্থ সাশ্রয় হবে।

এ বিষয়ে এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, ভিলেজ বুথের মাধ্যমে গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত জনগণের কাছে আর্থিক সেবা পৌঁছে দেয়া হবে। একই সঙ্গে ভিলেজ বুথ নিরাপদ ও উন্নতমানের সেবা প্রদান, পল্লী এলাকার আর্থিক উন্নয়ন, সব ধরনের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা, এসডিজি’র মূলমন্ত্র কাউকে পেছনে ফেলে নয়, এর বাস্তবায়ন করবে।

নতুন এ উদ্যোগ প্রান্তিক মানুষের আর্থিক সেবা নিশ্চিত করতে কাজ করবে বলে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ভিলেজ বুথ দেশের আর্থিক সেবাভুক্তির কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করবে এবং দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। এর ফলে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে এবং জনগণের জীবনমান পরিবর্তন করতেও সহায়তা করবে বলে জানান তিনি।

এছাড়া অনুষ্ঠানে জয়তুন বিজনেস সলিউশনসের চেয়ারম্যান মো. আরফান আলী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে ডিজিটাল বুথ বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। বিশেষ করে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সেবার সাথে সম্পৃক্ত করে ব্যাংকিং, ইন্সুরেন্স, পরিষেবা ফি প্রদান’সহ অন্য সব ধরনের পেমেন্ট, আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত করে গ্রামীণ পর্যায়ে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করবে।