বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী বর্ণাঢ্য ও যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে মন্ত্রিসভা কমিটির উদ্যোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আয়োজনে এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় সুবর্ণজয়ন্তী ওয়েবসাইট (https://bangladesh50.gov.bd/) ও সুবর্ণজয়ন্তী অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ আইসিটি টাওয়ারে অবস্থিত বিসিসি অডিটোরিয়ামে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক এমপি, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে উক্ত ওয়েবসাইট ও অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ-এর মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক এমপি এবং তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের ৫০ বছর ও ডিজিটাল বাংলাদেশের নানা অর্জনের পাশাপাশি অনলাইন কুইজ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন।

 

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক এমপি বলেন, “বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশ নিয়ে তাঁর চিন্তা-চেতনা বর্তমান নিয়ে ছিল তা নয়, বঙ্গবন্ধু ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করতেন, তাঁর কন্যাও ১০০ বছরের ডেলটা প্ল্যান করেন। মানুষ পরিকল্পনা করে পাঁচ বছরের, বঙ্গবন্ধু ও তাঁর কন্যা করেন ১০০ বছরের। তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন দাবি করি, কিন্তু কোনো কিছুর সমাধান দেই না, বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে সবকিছুর সমাধান দিতেন। একইভাবে বঙ্গবন্ধুকন্যাও কোনো সমস্যা বা দাবি থাকলে তার সমাধান বাতলে দেন।” তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের ভাল সব অর্জনকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। যাতে বিশ্ব দরবারে তা সমাদৃত হতে পারে। করোনার কারণে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীতে বঙ্গবন্ধুকে যেভাবে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার কথা ছিল, আমরা সেভাবে তুলে ধরতে পারিনি। মন্ত্রী বলেন, এই ওয়েবসাইট এবং এ ধরনের কুইজ প্রতিযোগিতা শিশুসহ সব বয়সী মানুষের মাঝে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করার পাশাপাশি মেধার বিকাশ ঘটাবে।

 

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ-এর মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক এমপি, “সুবর্ণজয়ন্তী অনলাইন কুইজের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আরো সহজভাবে ও  দ্রুত তুলে ধরতেই এই আয়োজন করা হয়েছে। এর আগে আইসিটি বিভাগ থেকে অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। যেগুলো তরুণ প্রজন্মের কাছে ব্যাপক সাড়া মিলেছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবং মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস, গৌরব, ঐতিহ্য ও বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শ ও দর্শন সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মের মাঝে জানবার সুযোগ দিতে এই আয়োজন।” তিনি বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ তারুণ্যদীপ্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার সক্ষমতা অর্জন করবে এই প্রজন্ম। এই প্রতিযোগিতার পুরস্কার হিসেবে বাংলাদেশে তৈরি ১৫০টি বিভিন্ন প্রযুক্তি পণ্য প্রদান করবো এবং পুরস্কারগুলো ওয়ালটনের সৌজন্যে প্রদান করা হবে। 

 

কুইজে অংশগ্রহণ করতে আজ ২৫ জানুয়ারি, ২০২২ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ তারিখ রাত ১১.৫৯ মিনিট পর্যন্ত নিবন্ধন করা যাবে। প্রতিযোগিতায় ক গ্রুপ ০১ মার্চ, ২০২২; খ গ্রুপ ০২ মার্চ, ২০২২; গ গ্রুপ ০৩ মার্চ, ২০২২ তারিখ অংশগ্রহণ করতে পারবে এবং প্রতিযোগিতার সময় সন্ধ্যা ০৭.০০ থেকে রাত ০৮.০০ টা পর্যন্ত। কুইজ প্রতিযোগিতা সকলের জন্য উন্মুক্ত এবং প্রতিযোগিতায় গ্রুপভিত্তিক বসয়সীমা ক গ্রুপ: (৮-১২ বছর), খ গ্রুপ: (১৩-১৮ বছর), গ গ্রুপ: (১৯-তদুর্ধ বছর)। ভুল/মিথ্যা তথ্য দিয়ে অংশগ্রহণ করলে প্রতিযোগিতা থেকে বাতিল বলে গণ্য হবে। https://bangladesh50.gov.bd/ এই ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হবে। একজন প্রতিযোগী একবারই অংশগ্রহণ করতে পারবেন। প্রত্যেকের জন্য বরাদ্দকৃত সময় ২৬ মিনিট। সকল প্রশ্নের মান সমান (১ পয়েন্ট)। তবে প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য এক চতুর্থাংশ (০.২৫) পয়েন্ট কাটা যাবে। সকল প্রশ্নের উত্তরের জন্য চারটি বিকল্প থেকে একটি সঠিক উত্তর বাছাই করতে হবে (এমসিকিউ)। কম সময়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক উত্তরদাতা থেকে বিজয়ী নির্বাচন করা হবে। চূড়ান্ত বিজয়ীদের ক্ষেত্রে বয়স যাচাই সাপেক্ষে পুরস্কার প্রদান করা হবে। প্রতিযোগিতা বাস্তবায়নের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত ব্যক্তি ও পরিবারবর্গ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

 

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ণাঢ্য ও যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে উদযাপনের নিমিত্তে মন্ত্রিসভা কমিটি গঠন করে। কমিটিতে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়কে সাচিবিক এবং মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে আহবায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারুণ্যদীপ্ত বাংলাদেশ সকল চ্যালেঞ্জ উত্তরণ ঘটিয়ে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, শোষণ ও বৈষম্যহীন, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করবার প্রত্যয়ে স্বাধীনতার ৫০তম বছর উদযাপন উপলক্ষ্যে উক্ত ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে। সুবর্ণজয়ন্তী অনলাইন কুইজের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের নিকট মুক্তিযুদ্ধের সম্পর্কে আরও সহজভাবে ও দ্রুত তুলে ধরতেই এই আয়োজনটি করা হয়েছে। 

 

এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর-এর সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ-এর সিনিয়র সচিব জনাব এন এম জিয়াউল আলম, পিএএ; বাণিজ্য মন্ত্রণালয়-এর সিনিয়র সচিব জনাব তপন কান্তি ঘোষ এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল-এর নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মো: আব্দুল মান্নান, পিএএ। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর এবং এটুআই-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ও গণমাধ্যমকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।