4 September, 2022
Reading Time: 1 Minute
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আন্তর্জাতিক পুরস্কার ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউএসআইএস-২০২২) পুরস্কারের জন্য চূড়ান্ত পর্বে এটুআই-এর ৪টি’সহ বাংলাদেশের মোট ৯টি উদ্ভাবনী উদ্যোগকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। মনোনয়ন পাওয়া এটুআই-এর ৪টি উদ্ভাবনী উদ্যোগ হলো- ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম কিশোর বাতায়ন (কানেক্ট), হেল্পলাইনের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছানো (জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩), ডিজিটাল বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ ব্যবস্থা এবং ফুড ফর ন্যাশন।
এছাড়া বাংলাদেশ থেকে মনোনয়ন পাওয়া অন্যান্য উদ্যোগগুলো- ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমি উন্নয়ন কর ব্যবস্থা, আইসিটি বিভাগের অধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)-এর জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অবকাঠামো উন্নয়ন (ইনফো-সরকার) প্রকল্প, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)-এর মোবাইল ফোনের নিবন্ধন সংশ্লিষ্ট ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) কার্যক্রম, এবং বাংলাদেশ এনজিও নেটওয়ার্ক ফর রেডিও অ্যান্ড কমিউনিকেশন এর এম্পাওয়ারিং ইউথ অ্যান্ড ইউথ উইমেন থ্রো ডিজিটাল লিটারেসি এবং ফাইটিং অ্যাগেনস্ট মিসইনফরমেশন, ডিসইনফরমেশন অ্যান্ড ম্যালইনফরমেশন থ্রো কমিউনিটি রেডিও ইন বাংলাদেশ।
ডব্লিউএসআইএস পুরস্কার সর্বমোট ১৮টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করবে। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে মৌলিক ও জনকল্যাণমূলক প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং এ সম্পর্কিত সেবা দানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রতিবছর জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্যা ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউএসআইএস) প্রাইজ নামে এই পুরস্কার প্রদান করে আসছে। ২০১৪ সাল থেকে টানা ৮বার বাংলাদেশের বিভিন্ন উদ্ভাবনী উদ্যোগ এই পুরস্কার অর্জন করেছে।
কিশোর বাতায়ন (Konnect)
কিশোর-কিশোরীদের জন্য নির্মিত একটি শিক্ষামূলক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ইন্টারেক্টিভ কনটেন্টের মাধ্যমে তাদেরকে ভবিষ্যতবান্ধব শিক্ষা, দক্ষতা, পরামর্শ প্রদান করে আগামীর জন্য তৈরি করার প্রয়াস চালানো হচ্ছে। করোনাকালীন সময়ে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছিলো। এর প্রেক্ষিতে কিশোর বাতায়ন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন অনলাইন ক্লাস ও শিক্ষামূলক কনটেন্টের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে যুক্ত রাখা সম্ভব হয়েছিলো। এই বাতায়নে প্রায় ৩০ লাখ শিক্ষার্থী যুক্ত রয়েছে এবং ৩৬ হাজরের অধিক মানসম্মত কন্টেন্ট রয়েছে, যার মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জ্ঞানার্জনের সুযোগ পাচ্ছে।
জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩
ইন্টারনেট সুবিধার বাইরে থাকা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে নাগরিক সেবা পৌঁছে দিতে জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩-এর মাধ্যমে বিভিন্ন সেবা প্রদান করা হচ্ছে। করোনাকালীন সময়ে এই হেল্পলাইনে নতুন নতুন সেবা যুক্ত করে এটিকে আরও বেশি নাগরিকবান্ধব প্ল্যাটফর্মে পরিণত করা হয়। এই হেল্পলাইনে সাড়ে ৪ হাজার বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের সমন্বয়ে গঠিত ভলেন্টিয়ারস ডক্টরস পুল-এর মাধ্যমে করোনাকালীন সময়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে টেলিমেডিসিন সেবা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। প্রায় ৭০ লাখ ফোন কলের বিপরীতে নাগরিকদের বিভিন্ন টেলিমেডিসিন সেবা প্রদান করা হয়।
ফুড ফর ন্যাশন
দেশের খাদ্যশস্য ও কৃষিপণ্যের সঠিক বিপণন, ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ, চাহিদা মোতাবেক সহজলভ্যতা তৈরি এবং জরুরি অবস্থায় ফুড সাপ্লাইচেইন অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশের প্রথম উন্মুক্ত কৃষি মার্কেটপ্লেস ‘ফুড ফর ন্যাশন’ (foodfornation.gov.bd) চালু করা হয়। সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা ‘একশপ’ এর নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সরাসরি কৃষক থেকে শুরু করে বাজারজাতকারী, আড়ৎদার, বিপণনকারী এবং প্রাতিষ্ঠানিক ভোক্তা একই প্ল্যাটফর্মে থাকায় এতে দাম আর মানের যাচাই আর সরাসরি বাণিজ্যিক যোগাযোগের সুযোগ রয়েছে। সহজ ও মোবাইলবান্ধব ইন্টারফেসের এ প্ল্যাটফর্মে ক্রেতা-বিক্রেতা রেজিস্ট্রেশন করে কৃষি জাতীয় সকল ভোগ্য ফসল বা সবজির ক্যাটাগরি নির্বাচন করে বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন এবং কিনতে পারছেন।
ডিজিটাল বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ ব্যবস্থা
দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাকে গতিশীল করতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে উন্নততর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ ব্যবস্থা চালু করা হয়। পরিবর্তনশীল আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে ডিজিটাল বাংলাদেশে দুর্যোগের আগে ও পরে মানুষকে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো), এটুআই ও আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি বিষয়ক সংস্থা গুগল এর সহায়তায় এই উন্নত ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। এ কার্যক্রমের আওতায় বাপাউবো’র বিদ্যমান ৫-দিনের আগাম বন্যা পূর্বাভাস উপাত্তকে প্রক্রিয়াকরণ করে উন্নততর প্লাবন মানচিত্রের সাহায্যে বন্যা শুরু হওয়ার তিন দিন থেকে তিন ঘণ্টা সময় পূর্বে স্থানীয় জনগোষ্ঠী পর্যায়ে তাৎক্ষণিকভিত্তিতে ইন্টারনেট প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ প্রদান করা সম্ভব।
চূড়ান্ত পর্বে মনোনীত উদ্যোগগুলোকে বিজয়ী করতে চলছে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া। ভোট প্রদানের শেষ সময় আগামী ৩১ মার্চ ২০২২। অনন্য উদ্যোগগুলোকে বিজয়ী করতে WSIS পুরস্কারের জন্য ভোট করার নিয়মাবলি:
ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে জনগণের সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বাস্তবায়িত এসব উদ্যোগকে ডব্লিউএসআইএস ২০২২ পুরস্কার বিজয়ী করতে বাংলাদেশের নাগরিকসহ বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে অনলাইনে ভোট করা যাবে। সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া উদ্যোগগুলোকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হবে। আপনার মূল্যবান ভোটই পারে বাংলাদেশের এই অনন্য উদ্যোগগুলোকে বিজয়ী করতে। আপনি নিজে ভোট দিন ও অন্যকে ভোট দিতে উৎসাহিত করে বাংলাদেশের বিভিন্ন উদ্ভাবনী প্রকল্পকে পুরস্কার অর্জনের সহায়তা করুন।