Download Screen Reader

জাতীয় সংসদে এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই)-২০২৩ বিল পাস

5 July, 2023

Reading Time: 1 Minute

প্রযুক্তিভিত্তিক উদ্ভাবন এবং জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় প্রকল্প থেকে এজেন্সি হচ্ছে এটুআই

জাতীয় সংসদে এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই)-২০২৩ বিল পাস

 

ঢাকা-বাংলাদেশ, 0৫ জুলাই, ২০২৩: বাংলাদেশে জনবান্ধব সেবাব্যবস্থার উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তি-ভিত্তিক উদ্ভাবনী সংস্কৃতির বিকাশ এবং জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সহায়তা প্রদানকল্পে এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই) নামে একটি এজেন্সি প্রতিষ্ঠা এবং আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধান প্রণয়নকল্পে ‘এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই) বিল, ২০২৩’ শীর্ষক একটি বিল জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। আজ বুধবার একাদশ জাতীয় সংসদের অনুষ্ঠেয় সংসদের বৈঠকে মাননীয় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, এমপি উক্ত বিলটি উত্থাপন করেন। বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস করা হয়।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ‘এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই) আইন, ২০২৩’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। এর আগে গত ৭ জুন সংসদে প্রথম সংসদের বিল উত্থাপন করা হয়। পরে পরীক্ষাপূর্বক রিপোর্ট প্রদানের জন্য ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি’তে প্রেরণ করার অনুরোধ জানানো হয়। স্থায়ী কমিটির সুপারিশক্রমে বিলটি আজ সংসদে পুনরায় উত্থাপন করা হয়।

এই আইন অনুমোদন এবং কার্যকর হওয়ার পর সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা প্রকল্প থেকে ‘এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই)’ নামে একটি এজেন্সি প্রতিষ্ঠা পাবে। এজেন্সির প্রধান কার্যালয় হবে ঢাকায়। এজেন্সি পরিচালনার জন্য ১৮ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠিত হবে। উক্ত পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি থাকবেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী/উপমন্ত্রী। এছাড়া নয় সদস্যের একটি নির্বাহী কমিটি গঠিত হবে, সেখানে উক্ত বিভাগের সচিব চেয়ারম্যান হিসেবে ন্যস্ত হবেন। 

আইনে এজেন্সির ক্ষমতা ও কার্যাবলি সম্পর্কে বলা হয়েছে- জনবান্ধব সেবাব্যবস্থার উন্নয়নে প্রযুক্তিভিত্তিক উদ্ভাবনী সংস্কৃতির বিকাশ, জনকল্যাণে প্রযুক্তি বিষয়ক উচ্চতর গবেষণা পরিচালনা এবং গবেষণায় উদ্ভাবিত পণ্য ও সেবার মেধাস্বত্ত্ব সংরক্ষণে সহায়তা প্রদান, প্রযুক্তি সম্পর্কিত জনসচেতনতা ও চাহিদা সৃষ্টি এবং জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সহায়তা প্রদান, প্রযুক্তিভিত্তিক উদ্ভাবনী কর্মসূচি ও প্রকল্প গ্রহণ, অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সরকার, শিল্প, শিক্ষাব্যবস্থা ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশাসহ দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানসমূহকে সেবা ও পরামর্শ প্রদান, কোনো নাগরিক বা প্রতিষ্ঠানকে অগ্রসর প্রযুক্তি সম্পর্কিত জনসচেতনতা ও চাহিদা সৃষ্টিতে সহায়তা প্রদান।

২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি- ইউএনডিপির অর্থায়নে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) কর্মসূচি শুরু করা হয়। পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ২০১৮ সালে এটুআই প্রোগ্রামকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আওতায় বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প হিসেবে ন্যস্ত করা হয়। ২০২০ সালে একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) এর নাম পরিবর্তন করে এসপায়ার টু ইনোভেইট (এটুআই) রাখা হয়। বর্তমানে এটা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এর আওতায় বাস্তবায়নাধীন ও ইউএনডিপির সহায়তায় পরিচালিত একটি প্রোগ্রাম হিসেবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিভিন্ন উদ্ভাবনী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। 

তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের দোরগোড়ায় দ্রুত, স্বচ্ছতার সাথে, হয়রানিমুক্তভাবে ও স্বল্পমূ্ল্যে সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য এটুআই প্রোগ্রাম কাজ করছে। সরকারি সেবা প্রদান প্রক্রিয়ার উৎকর্ষ সাধনে এবং সেবাসমূহকে আরো অন্তর্ভুক্তিমূলক, সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্য এবং সহজলভ্য করে নাগরিক-কেন্দ্রিক উদ্ভাবনী সংস্কৃতি প্রবর্তনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারকে সহযোগিতা করছে। এসব কার্যক্রমসমূহের মূল উদ্দেশ্য হলো সেবা প্রার্থী জনগণকে পূর্বের তুলনায় স্বল্প সময়, স্বল্প খরচ ও কম যাতায়াতের মাধ্যমে আরো গুণগত ও সন্তোষজনক সেবা প্রদান। এটুআই এর বিভিন্ন উদ্যোগের সেবা সহজীকরণের মাধ্যমে সরকারি সেবা গ্রহণের সময়, খরচ এবং যাতায়াত এর সাশ্রয় ঘটেছে, যার ফলে জনগণ আরও বেশি সেবা গ্রহণে আগ্রহী হচ্ছেন। সাধারণ তথ্য যেগুলো নিতে তাদেরকে বাসভাড়া, রিকশাভাড়া এবং পায়ে হেঁটে অফিসগুলোতে যেতে হতো, এখন তা অনলাইনে গ্রহণ করতে পারছেন। সরকারি সেবা প্রদান করে এই প্রক্রিয়া থেকে আরও বেশি রাজস্ব আয় সম্ভব হচ্ছে যা উন্নয়নের অন্যান্য ক্ষেত্র তৈরিতে সহায়ক। গবেষণায় দেখা গেছে, এটুআই প্রকল্পের উদ্যোগের ফলে সেবা গ্রহণে নাগরিকদের ১৯ বিলিয়ন সময়, ২১.৬ বিলিয়ন ডলার খরচ এবং ১২.৭ বিলিয়ন যাতায়াত কমেছে।