Download Screen Reader

ই-কমার্স খাতকে বিশ্বস্ত করতে চালু হচ্ছে ইউবিআইডি’র নিবন্ধন, কেন্দ্রীয় অভিযোগ নিষ্পত্তি সিস্টেম এবং ইন্টার-অপারেবল ডিজিটাল ট্রানজেকশন প্ল্যাটফর্ম ‘বিনিময়’

4 September, 2022

Reading Time: 1 Minute

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানসমূহের নিবন্ধন এবং ভবিষ্যতে সহজে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইউনিক বিজনেস আইডি প্রাপ্তিতে ফেব্রুয়ারিতে সরকারের মাইগভ প্ল্যাটফর্মে চালু হতে যাচ্ছে ইউনিক বিজনেস আইডি’র নিবন্ধন। এছাড়াও ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিতেও কেন্দ্রীয় অভিযোগ নিষ্পত্তি সিস্টেম (সেন্ট্রাল কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম-সিসিএমএস) এবং ইন্টার-অপারেবল ডিজিটাল ট্রানজেকশন প্ল্যাটফর্ম ‘বিনিময়’ চালু করা হবে। ডিজিটাল কমার্স খাতে স্থিতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের কারিগরি সহায়তায় নির্মীয়মান প্ল্যাটফর্ম ও উদ্যোগসমূহের বর্তমান নির্মাণ অগ্রগতি পর্যালোচনা সভা শেষে বুধবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, এমপি আইসিটি টাওয়ারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এমন তথ্য জানান।

 

মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, এমপি, বলেন, “ডিজিটাল বাণিজ্যিক কার্যক্রমকে ঘিরে উৎপাদক, বিক্রেতা, ক্রেতা, উদ্যোক্তা সবকিছু মিলে দেশে একটা ইকোসিস্টেম তৈরি হয়েছে। ক্যাশলেস সোসাইটি গড়ে তুলতে আমরা ই-কমার্সের এই ইকোসিস্টেমকে টেকসই করতে চাই। নতুন উদ্ভাবন ও নতুন প্রযুক্তিকে ব্যবহার করেই ই-কমার্সে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে। ২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে ই-কমার্স খাতে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারের বাজার তৈরি হয়েছে। অনলাইনে দেশের আড়াই হাজারের অধিক ই-কমার্স এবং ৫০ হাজারের বেশি এফ-কমার্স প্ল্যাটফর্মে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের বেচা-কেনা হচ্ছে।”

 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “ই-কমার্স খাতে স্থিতিশীলতা আনতে পারলে মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসও ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। ই-কমার্সে আস্থা ফেরাতে এই খাতে স্থিতিশীলতা আনয়ন এবং অনলাইন কেনা-বেচাকে ত্বরান্বিত্ব করার ক্ষেত্রে সমাধানের পথ হিসেবে উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের ডেটাবেজ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ইউনিক বিজনেস আইডি’র নিবন্ধন এবং ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এটুআই, ভোক্তা অধিকার ও ই-ক্যাব মিলে তৈরি কেন্দ্রীয় অভিযোগ নিষ্পত্তি সিস্টেম আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে চালু করা হবে। অন্যদিকে, ইন্টার-অপারেবল ডিজিটাল ট্রানজেকশন প্ল্যাটফর্ম ‘বিনিময়’ এরইমধ্যে তৈরি হয়ে গেছে। আগামী মার্চে উদ্বোধনের পর বিনিময় প্ল্যাটফর্ম ও অ্যাপের মাধ্যমে ইন্টার-অপারেবল ডিজিটাল ট্রানজেকশন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। আমরা প্রযুক্তির ব্যবহার বন্ধ করতে পারবো না। আবার প্রযুক্তি ব্যবহারে যে সমস্যা তৈরি হয় তাও বন্ধ করা যাবে না। তবে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করেই এসব সমস্যা সামাধান করতে হবে।”

 

ডিজিটাল বাংলাদেশকে উদ্ভাবনী বাংলাদেশের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, “ফিজিক্যাল শপকে ডিজিটালে নিয়ে যেতে অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোকে আরো বেশি প্রযুক্তি নির্ভর করতে হবে। কেনাবেচায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য এসব লেনদেনকে ডিজিটাল মাধ্যমে নিয়ে আসতে হবে। সঠিক পলিসি, টেকনোলজি এবং স্ট্রাটেজি নেওয়ার মাধ্যমে ই-কর্মাসকে আরো স্বচ্ছ ও নিরাপদ করা সম্ভব। যার সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলো ডিজিটাল কোরবানির হাট।”

 

উল্লেখ্য, সভায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানসমূহের নিবন্ধন এবং ভবিষ্যতে সহজে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইউনিক বিজনেস আইডি (ইউবিআইডি) প্রাপ্তিতে সরকারের মাইগভ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আবেদন এবং আইডি পরিচালনা বিষয়ে ডেমো প্রদর্শন করা হয়। ইউবিআইডি’র জন্য প্রথমে মাইগভ প্ল্যাটফর্মে ভিজিট করে অনলাইনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে নিবন্ধনের আবেদন করতে হবে। আবেদনের সময় উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ীর জাতীয় পরিচয়পত্র, তার নামে নিবন্ধিত মোবাইল নম্বর, ব্যবসায়িক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও স্থায়ী-অস্থায়ী ঠিকানা সঠিকভাবে প্রদান করতে হবে। ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধনের আবেদন পাওয়ার পর তাদের সরবরাহ করা তথ্যগুলো নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভাণ্ডার থেকে পরিচয়ের মাধ্যমে যাচাই করা হবে। প্রয়োজনীয় যাচাইয়ে শেষে সব ঠিক থাকলে এবং নিবন্ধনের জন্য সুনির্দিষ্ট তথ্যগুলো পাওয়ার পরই ওই প্রতিষ্ঠানকে স্বতন্ত্র ইউবিআইডি নম্বর প্রদান করা হবে। এছাড়াও সভায় এসময় কেন্দ্রীয় অভিযোগ নিষ্পত্তি সিস্টেম-এর ডেমোও প্রদর্শন করা হয়।

 

প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যান্যদের মধ্যে আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব জনাব এন এম জিয়াউল আলম, পিএএ, এটুআই-এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী, এটুআই-এর গ্রামীণ ই-কমার্স ও হেড অব কমার্সিলাইজেশন রেজওয়ানুল হক জামি এবং ই-ক্যাব পরিচালক ও চালডালের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জিয়া আশরাফ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং এর অধীন বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থা, এটুআই এবং আইডিয়া প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকগণসহ, প্ল্যাটফর্মগুলো প্রস্তুতে যুক্ত বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তাগণ এবং গণমাধ্যম কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।